কবিতা

মইনুল হক

নামহীন

আমি বস্তুতঃ বাউল হতে চেয়েছিলাম
নতুবা লম্বা পাঞ্জাবীর কবি
চেনা শহরের এই অচেনা বাতাস ফেলে
নিরুদ্দেশ পথ হেঁটে যাবো নির্বান্ধব
নদীর কল্লোল আর অরণ্যের মর্মরে
বাঁধবো গানের কথন, শব্দের স্বপ্নজাল
মাটির পলিতে মায়ার ভাঙ্গা শেকল
রেখে যাবে আমার পদচিহ্ন, প্রিয় সন্ন্যাস
গাছের বাকলে লেখা নির্জন অক্ষর
কবিতার গর্জনে ভাঙ্গবে ভোগের প্রাসাদ
আকাশের সাতরঙে ভাসবে চিত্তের সনদ
অনুভবের পরিযায়ী বাণী ৃ
এ জীবনতো ঘর বাঁধার নয়
যতটা মন বাঁধারৃ

অথচ, যতটা অযুত পথ পাড়ি দিলে
আতœসাধনের গান গাওয়া যায়
মাটির গন্ধে, বৃষ্টি রোদনে
চোখের আরশীতে ধরা দেয়
চাওয়া পাওয়ার অমিমাংসিত বিভেদ
ততোটা খরস্রোত সাতঁরাতে পারিনি বলে
বাউল হতে পারিনি

যেভাবে কলম ঘোরালে শব্দ বোমায়
উচ্চারিত হয় মানবতার জয়ধ্বনি
লেখনির অগ্নি মশালে পোড়ানো যায়
স্বার্থের লৌকিক আয়াত
ততোটা বেনোজলে লিখতে পারিনি বলে
কবি হতে পারিনি

তাই বলে ভেবোনা , আমার
কিছুই হয়নি হওয়া, কিছুই হয়নি পাওয়া
যাপনের নাগরদোলায় চড়ে
চাইলেই তো ছুঁতে পারি
নিয়ন আলোয় কেনা এক্সটা লার্জ রাত
রাউটারে বন্টিত প্রেম, আট জিবি
কবিতার কোলাজ, নিযুত গানের স্বর
হান্ডেড কে আতœতৃপ্তি, সাথে
বিবিধ সুখের পাসওয়ার্ড

কিন্তু, তারপর!!
তারপর মানপত্রের সোনালী ফ্রেমে
যখনই তাকিয়ে দেখি
এতো নয় আমারই ছবি!!
আমি তো বাউল হতে চেয়ে ছিলাম
বড়জোর লম্বা পাঞ্জাবীর কবি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *