গাফফার মাহমুদ
গুচ্ছকবিতা
বিটুইন দ্য কার্টেইন্স
তুমুল বৃষ্টিরা ঝরে পড়ছে, বৃষ্টি ঝরুক এবার নিকোনো উঠোন জুড়ে
মেঘকান্নার অবুঝ বৃষ্টি নামুক আহত হৃদয় কোণে অজর ধারায়
তুমি গাইছো নিমফুল দ্রোহের সুতীব্র সুর
নিমিষেই পৌঁছে যাওয়া খন্ডিত মেঘচূড় !
শীতল হাওয়ায় হাওয়ায় বৃষ্টি ভেজায় দেহের ভেতর জমাট বাঁধা দুঃখগুলো
আমরা কী খুঁজেছি কভূ নিয়ম-অনিয়মের মৌন প্রয়াস দৃষ্টিগান!
মূল্যবোধে ভাঙছি কতো, ভাঙছি যতো অনুপ্রাস
তুমিও খোঁজনি অর্থহীন অযাচিত কথার মূল্য কভূ
তোমার মনের দোরে খিলকি এঁটে সিটকীটায় দাও ঝুলিয়ে তালা
বাহিরেতে তুমুল ভিজছি আমি রাখোনি খবর কভূ এ বৃষ্টি বেলা !
আদমসুরাত পিতা, শুকতারা মা
সৌরমন্ডলের সুদৃশ্য জ্যোতিস্ক তারা
ছায়াপথ এঁকে যায় সুদূরের পথ
দূর নক্ষত্রে রাখি চোখ ক্রমশঃ অকাতরে
টিপটিপে আলো ছড়ায় ওই শুকতারা।
নীল আসমান পথ দেখায় আদমসুরাত
কার্পাস তুলো পুচ্ছ-পুচ্ছ মেঘের কিনার
কতো দিন, পিতা-মাতা হীন কতোটা বছর!
ওই যে ওই মিটিমিটি তারা দিচ্ছে পাহারা
ওই তারাটাই বুজি হারানো মায়ের চোখ
কেবল দৃষ্টি রাখেন শোকগ্রস্ত সন্তান পানে।
শাদা শাদা মেঘের জায়নামাজ বিছানো ওই
তারকা শোভিত আদমসুরাত পিতা
প্রার্থনায় মগ্ন থেকে কতো করছেন দোয়া
রাতের নিস্তব্ধতা বাড়ে; ঘুমহীন এই যে আমি
চুপিচুপি বলছি কথা, ওই তারাটাই বুজি মা
আদমসুরাত প্রিয় পিতা এখনও দেখান পথ!
চরকায় আঁটে ভাগ্যচাকা
দুর্গতির চাকায় তেল মাখছি
ঘেমে ঘেমে একাকার
হর্ষে মাখছি কতো তিল-সরিষা
অলিভ সুগন্ধি তেল
প্রতিদিন চলছি তেল মেখে মেখে
কাষ্ঠ, লৌহদন্ড ঘূর্ণাবর্তের চাকায়
কতো পথ, ব্যস্ত সড়ক
চলছি তো চলছি-
চক্রাকারে ঘুরছি
ফেলছি পা, পায়ে পায়ে পথ!
তেলহীন শুকনো জীবন চাকা
কতো তেল ঢাকা পড়ে যায় বিবর্ণ ধূলোয়
কতো চাকায় পদপিষ্ট রোজ পিচঢালা কিষাণ মজুর
নিয়তিটা বদলাতে রোজ চরকায় আঁটে ভাগ্যচাকা।